মায়ানমারে স্কুলে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলা: ১৭ ছাত্র নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর দেশব্যাপী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও মায়ানমারের শাসক জান্তা বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১৭ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো অন্তত ২০ জন। সোমবার এই হামলার ঘটনা ঘটে বিরোধী বাহিনী নিয়ন্ত্রিত সাগাইং অঞ্চলের দেপাইন শহরের একটি স্কুলে। নিহতদের সবাই ওই স্কুলের ছাত্র।
স্কুলটি পরিচালিত হচ্ছিল ছায়া সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ বা এনইউজির অধীনে। এনইউজির মুখপাত্র নে ফোন ল্যাট বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ১৭ জন শিক্ষার্থী নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছে। তবে বিমান হামলার কারণে ধ্বংসস্তূপে অনেকে নিখোঁজ থাকতে পারে, ফলে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’
দেপাইন শহরটি মধ্য মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে, মান্ডালয়ের উত্তরে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং ২৮ মার্চের ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে জান্তা বাহিনী বিরোধী আন্দোলন দমন করতে সহিংস হামলা চালিয়ে আসছে। এর পর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে এনইউজি এবং বিভিন্ন জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী একত্রে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর জান্তা সরকার ৩১ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল, যাতে ত্রাণ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করা যায়।
বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকেও একই রকম ঘোষণা এসেছিল। তবে এর পরও বিভিন্ন এলাকায় বিমান ও গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।
এই হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জান্তা সরকারের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রসঙ্গত, এনইউজি মূলত ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত নির্বাচিত সরকারের সাবেক সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি ছায়া সরকার, যা দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এই হামলা যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা এবং জান্তা বাহিনীর প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
সূত্র : রয়টার্স
Post a Comment